গাজার উত্তরাঞ্চলে ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন এমন অন্তত ৬৭ জন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। ফিলিস্তিনের হামাস-শাসিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে রোববার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এছাড়া একই ঘটনায় আরও ১৫০ জন আহত হয়েছেন, যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনাটি ঘটেছে গাজার শিফা হাসপাতালের কাছে, যেখানে জাতিসংঘের দেওয়া ত্রাণ সহায়তার অপেক্ষায় জড়ো হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। এমন বর্বর হামলার দায়ে ইসরাইলি বাহিনী দাবি করেছে, তারা "সতর্কতামূলকভাবে গুলি ছুড়েছে", তবে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে তারা দ্বিমত পোষণ করেছে।
এর একদিন আগেই, শনিবার দখলদার ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে আরও ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হন।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, ইসরাইল থেকে প্রবেশ করা তাদের ২৫টি ত্রাণবাহী ট্রাক ক্ষুধার্ত মানুষের বিশাল ভিড়ের মুখে পড়ে, এবং পরে সেখানেই গুলিবর্ষণ হয়। সংস্থাটি বলছে, গাজার মানুষেরা দুর্ভিক্ষের মুখে, এবং জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সরবরাহ বাড়ানো দরকার।
গাজার বাজারে প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জন্য ন্যূনতম খাদ্য চাহিদা পূরণ করাও এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান ইয়ান এগেল্যান্ড জানিয়েছেন, “গত ১৪২ দিনে আমরা গাজায় একটি ট্রাকও প্রবেশ করাতে পারিনি। ইউরোপীয় নেতারা যেসব আশ্বাস দিচ্ছেন, বাস্তবে তার কিছুই ঘটছে না।”
এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ অভিযোগ করেছে, মিসরের সীমান্তে তাদের কাছে গাজার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য মজুত থাকলেও, ইসরাইলি নিষেধাজ্ঞার কারণে তা গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না। সংস্থাটি বলেছে, “সীমান্ত খুলুন, অবরোধ তুলে নিন এবং আমাদের মানবিক কাজ করতে দিন।”
গাজার ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে এই ঘটনা নতুন করে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে।